ভাইরাল পথশিশুর চোখের জখম নিয়ে যা জানা গেল

Share the post

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ১০-১১ বছরের শিশুর লকডাউনবিষয়ক একটি মন্তব্য ভাইরাল হয়েছে। একটি অনলাইন গণমাধ্যমে লাইভ চলাকালে শিশুটি ক্যামেরার সামনে এসে ঈদকে সমনে রেখে দেওয়া লকডাউন নিয়ে প্রশ্ন তোলে। শিশুটির বক্তব্য ভাইরাল হওয়ার পর তার আরেকটি ছবিও ভাইরাল হয়। ভাইরাল সেই ছবিতে চোখ ফোলা এবং মুখে মারের জখম দেখা যায়।

সম্প্রতি ছবিটি নিয়ে ফেসবুকে গুঞ্জন শুরু হয়েছে, লকডাউন প্রসঙ্গে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে কোনো একটি পক্ষের রোষানলে পড়েছে শিশুটি। তাই তাকে মারধর করা হয়েছে।এমন ছবি ও গুঞ্জনের বিষয়টি ফের ভাইরাল হয়। অনেকেই দুঃখপ্রকাশ করে শিশুটির নির্যাতনকারীদের বিচার দাবি করেন। কেউ বা তার দায়িত্ব নিতে চান।

এমন পরিস্থিতিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাংবাদিকদের লাইভে এসে লকডাউন নিয়ে প্রশ্ন তোলা শিশুর নাম- মো. মারুফ। সে একজন পথশিশু। বাবা-মার সঙ্গে থাকে না সে। রাজধানীর কোটকাচারি, জগন্নাথ কলেজ, ভিক্টোরিয়া পার্ক, সদরঘাটসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ানোই তার কাজ।

মামুনুল হকের রিমান্ড বিষয়ে কথা বলতে সোমবার (১৯ এপ্রিল) লাইভে আসেন অনলাইন গণমাধ্যমের সাংবাদিক পলাশ মল্লিক। সেই ভিডিওতে হঠাৎ চলে আসে মারূফ। এরপর ভিডিওটি ভাইরালের দুদিনের মধ্যেই পুনরায় ভাইরাল হয় মারুফের চোখ ফোলা ছবি। কে বা কারা তাকে মেরেছে সেই প্রশ্ন খুঁজতে গেলে স্থানীয়দের অনেকের দাবি, মারুফের সঙ্গে তার এলাকার পথশিশুদের মারামারিতেই এই জখমের ঘটনা ঘটেছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মারামারিতে জখমের পর রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তি শিশু মারুফের সঙ্গে আদালত এলাকায় একটি সেলফি তোলেন। সেই সেলফি থেকে শিশুটির ছবিটি কেটে নিয়ে পরে ‘মনগড়া’ অভিযোগ তুলে ভাইরাল করা হয় ফেসবুকে।

রুহুল আমিন মারুফের মার খাওয়ার বিষয়ে ফেসবুকে লেখেন, ‘জজকোর্টের সামনে। চোখে কি হইছে জিজ্ঞেস করি নাই। ফুটপাতে থাকে, নেশাও করে। হয়তো নিজেদের মধ্যে মারামারি করতে পারে।’

বুধবার বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীরা মারুফকে খুঁজে বের করেন। তাকে তার জখমের বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়। মারুফ জানায়, লকডাউন নিয়ে এমন বক্তব্য দেওয়াতেই তাকে মারা হয়েছে। রাত ১০ টায় কোর্ট প্রাঙ্গণেই তাকে মারা হয়েছে। তবে কে বা কারা তা জানাতে পারেনি মারুফ।

শিশুটির বাবা বিক্রমপুরে থাকেন। মা-বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। তিনি অন্যত্র সংসার করছেন।

মারুফের বিষয়ে সদরঘাটে অবস্থানরতরা জানায়,  সে ছিন্নমূল। পার্ক, ফুটপাতে ঘুমায়। কেউ খাবার দিলে খায়, আবার অনেক সময় চেয়ে নিয়ে খায়। সে মাদকাসক্ত। ডান্ডি নামক এক মাদক সেবন করে সে।

মারুফের বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ওই শিশু বা ভাইরাল কোনো ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত জানি না।’সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি ভাইরালের পর আমরা ওর খোঁজ নিয়েছি। কোনো পুলিশ ওর গায়ে হাত তোলেনি।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated