নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবৈধ কারেন্ট জালের রমরমা ব্যবসা, জালের মার্কেট খুঁজে পায় না প্রশাসন
সোহেল খান দূর্জয়,নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের অবৈধ কারেন্ট জাল মশারি জাল সহ নানা ধরনের জাল বিক্রি হয় দিনে দুপুরে হাওর অঞ্চলের রাজধানী খ্যাত এই শহরের জাল-পট্টিতে রয়েছে এসব জালের বড় মার্কেট এখান থেকেই মোহনগঞ্জ খালিয়াজু সহ আশেপাশের এলাকা সুনামগঞ্জ ধর্মপাশা, মধ্যনগর, জামালগঞ্জ, তাহেরপুর উপজেলার সব ধরনের জাল সরবরাহ করা হয়। অন্যান্য সংগঠনের মত জাল বিক্রেতাদের আবার রয়েছে কমিটি, কমিটির দুই জনের দায়িত্ব রয়েছে ঝামেলার সবদিক ম্যানেজ করার, তবে জেলেদের অভিযোগ প্রশাসন শহরের মার্কেটে পাইকারি বিক্রেতা তাদের না ধরে শুধু গরিব ছেলেদের জাল পুড়িয়ে তাদের দায় শেষ করেন। এতে পেটের দায়ে ঋণ করে জল কিনে মাছ বিক্রি করে পরিবার-পরিজন চালানো জেলেরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, আর মূল বিক্রেতারা রয়ে যাচ্ছেন আড়ালে। কয়েকজন জেলেদের সাথে কথা বলে জানা গেছে এই মার্কেটে ছোট পাশের কারেন্ট জাল্ট ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়, মাজারী পাশের কারেন্ট জাল বিক্রি হয় ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা কেজি ধরে, আর বড় পাশের জাল বিক্রি হয় ১৭০০ টাকা কেজি ধরে, এছাড়া চায়না জাল মশারি নেট সহ নানা ধরনের জাল দিয়ে মাছ ধরা হয় এর মধ্যে মশারি নেট দিয়ে ছোট বড় সব ধরনের মাছ ধরা হয়। একেবারে জানা গেছে,ছোট পোনা মাছ ধরতে এই জাল বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে মোহনগঞ্জ, থেকে পাইকারি ধরে কারেন্টাল নিয়ে ডিংগাপোতা হাওর অঞ্চলের জেলেদের কাছে বিক্রি করে। খুব ছড়ায় বিক্রি করেন এমন কয়েকজন ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ না করা সত্ত্বে বলেন, মোহনগঞ্জের জাল পট্টি থেকে জেলেদের চাহিদা অনুযায়ী কারেন্ট জাল মশারি জাল সহ অন্যান্য জাল কিনে নিয়ে বিক্রি করি স্থানীয় ছেলেদের কাছে এছাড়া অনেক জেলে নিজেরা ও শহরের ওইসব দোকান থেকে জাল কিনেন কাজ থাকে না তাই এসব এলাকার কয়েক হাজার জেলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের চাহিদা অনুযায়ী আমি জাল সরবরাহ করি, এর মধ্যে মশারি জাল মূলত একেবারে ছোট মাছ ধরার জন্য ব্যবহৃত হয়। এ জাল দিয়ে মাছের ডিম ও তুলে আনা যায় ডিঙ্গা পোতা হাওড়ে মাছ ধরেন স্থানীয় জেলে মজিবুর রহমান, স্বাস্থ্য মিয়া, রফিকুল, রবিনসহ অনেকে জানান, গরিব জেলেরা সুদে টাকা এনে জাল কিনেন। মাছ ধরে বিক্রি করে পরিবার চালান। কেউ কেউ গরু বাছুর বিক্রি করে জাল কিনেন। কিন্তু প্রশাসন মাঝে মধ্যে ঐসব গরিব ছেলেদের অবলম্বন পুড়িয়ে দেয়। আমরা ছেলেরা তো এসব জাল মোহনগঞ্জ বাজার থেকে কিনি কিন্তু বাজারে দিন দুপুরে যারা এসব জাল বিক্রি করছে তাদের গুদামে হানা দেয় না পাইকারি বাজার বন্ধ হলে তো জেলেরা কিনতে পারবে না আগে পাইকারি মার্কেট বন্ধ করার দাবি তাদের।
মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান চয়ন এ নিয়ে খুব প্রকাশ করে বলেন, মোহনগঞ্জ হলো হাওর অঞ্চলের অবৈধ জলের একমাত্র মার্কেট। এখান থেকে মোহনগঞ্জ খালিয়াজুরী পাশের সুনামগঞ্জ, ধর্মপাশা, মধ্যনগর, জামালপুর, ও তাহেরপুর সহ পুরো হাওড় অঞ্চলের অবৈধ কারেন্ট জাল, মশারির নেট, ও চায়না জালসহ সব ধরনের জাল বিক্রি হয়। এসব অবৈধ জালের ব্যবহারের কারণে হাওরে এখন মাছের সংকট এ পর্যন্ত প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে হওয়া প্রতিটা সভা সেমিনারে বলেছি শহরের অবৈধ কারেন্ট জালের মার্কেট এগুলোতে অভিযান চালান,মার্কেট বন্ধ হলেই অবৈধ জালের ব্যবহার বন্ধ হবে গরিব জেলেদের মারবেন না, কিন্তু কাজের কাজ তারা কিছুই করছেন না। তিনি আরো বলেন, অনেক সময় জালের মার্কেট দেখানো অভিযান হয়, কিন্তু কিছুই পাওয়া যায় না তোর সবাই জাল লুকিয়ে ফেলে। এসব ধরতে হলে চোসছ নিয়োগ করে পরে অভিযান করতে হবে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ জানান, মৎস্য সপ্তাহে হাওরে অভিযান চালিয়ে অনেক ধরনের অবৈধ জাল জব্দ করেছি পাশাপাশি শহরের জাল মার্কেটে অভিযান চালিয়েছি ওরা অনেক চালাক। উপস্থিতির টের পেয়ে একে অন্যকে ইশারা দিয়ে লুকিয়ে পড়ে।গুদাম কোথায় জানা যায় না এবার অভিযানে একটা গুদাম পেয়েছি এর মালিক পাওয়া যায়নি। ইউএনও স্যারসহ আমরা দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে ভেতর থেকে টেনে এক বস্তা জাল বের করে এনে পুড়িয়েছি ।
মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির আহমেদ আকঞ্জি বলেন, হাওরের পাশাপাশি শহরের দোকানগুলোতে অভিযান করেছি। দোকানে মূলত অবৈধ জাল গুলো রাখে না অন্য কোথাও লুকানো থাকে দোকান গুলোই আসলে বন্ধ করতে হবে, এখান থেকেই হাওর অঞ্চলের এসব জাল সরবরাহ হয় শুনেছি, সবার তথ্য সংগ্রহ করতে বলেছি এখান থেকে কৌশল নিয়ে হাতেনাতে ওদের ধরবো।