ডিসেম্বরে নয়, জুনেই চালু হবে পদ্মাসেতু: অর্থমন্ত্রী
ডিসেম্বরে নয়, জুন মাসেই পদ্মা সেতু চালু হবার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর ভার্চুয়ালি ব্রিফিং করেন অর্থমন্ত্রী।
পদ্মা সেতু চালু হতে দেরি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন এ বছরের শেষের দিকে হবে। আমরা প্রত্যাশা করে আছি, এ বছরের (অর্থবছর) শেষ নাগাদ এটি চালু করতে পারব, এটা আমাদের প্রত্যাশা। আমাদের ফিন্যান্সিয়াল বছর, যেটি জুনে শেষ হবে। আমরা বিশ্বাস করি এরমধ্যে এটি চালু করতে পারব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যেটা প্রত্যাশা করেছিলাম মার্চ মাসে আসবে, সেটি মার্চ মাসে এলো না। আমার মনে হয় অনেক লম্বা সময় লাগবে না। তারপরও অস্বাভাবিক সময়ের মাঝ দিয়ে পৃথিবী এখন যাচ্ছে। যে যুদ্ধ চলছে তার কারণে কেউই ইফেকটিভলি কোনো কিছু এখন প্রজেকশন করতে পারে না। কমিটমেন্ট করার অবস্থাও নেই। তবুও আমরা আশায় আছি। এ বছরেই আমরা এটির শেষ দেখতে চাই।’
পদ্মাসেতুতে টোলের পরিমাণ নিয়ে মন্ত্রী বলেন, টোলের পরিমাণ এখনো নির্ধারিত হয়নি। আমরা একটা কথা সুষ্পষ্টভাবে বলতে চাই, পদ্মা সেতুতে আমরা যে পরিমাণ খরচ করেছি, সেটা পূর্ণমাত্রায় টোল বাবদ আদায় করব। অন্যান্য প্রজেক্টগুলো থেকেও কিন্তু টোল আদায় করছি, এখান (পদ্মাসেতু) থেকেও টোল আদায় হবে। শুধু টোল আদায় হবে না, আমরা প্রফিটও করব। এ প্রজেক্টের জন্য আমরা যে পরিমাণ খরচ করেছি তারচেয়ে বেশি আমরা অর্জন করব। সারা বিশ্বও তাই করে। সারা বিশ্বে এ ধরনের প্রকল্পগুলো টোলভিত্তিকই করা হয়। টোলের হার এখনো ঠিক হয়নি। হলে আপনারা (গণমাধ্যম) জানতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে পারি, যে পরিমাণ টাকা এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে এবং শেষ দিন পর্যন্ত যে খরচ হবে সেটি আমাদের টোল থেকেই আদায় করতে হবে। না হলে এগোনো যাবে না, কারণ এগুলো আমাদের মেইনটেইন করতে হবে। আমাদের একটা প্রকল্প থেকে আরেকটা প্রকল্প করতে হবে। একটা ব্রিজ থেকে আরেকটা ব্রিজ করতে হবে। সুতরাং এগুলো করার জন্য রেভিনিউ দরকার হবে। তবে সবার জন্য লাভজনক অবস্থায় থাকবে। যারা ব্যবহার করবে তারাও লাভজনক অবস্থায় থাকবে, সরকারও।’
কত বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুর ব্যয় তুলতে চান, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা এটি নিয়ে এখনো ডিটেইল কাজ করিনি। আমরা টোলের মাধ্যমেই খরচ তুলে নিয়ে আসব। সেখান থেকে কিছু লাভও করতে চাই। সেই লাভটা সরকারের ফান্ডে না নিয়ে আরও নতুন প্রকল্প দাঁড় করানোর চেষ্টা করব।’
এর আগে, গতকাল (৬ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন, ‘এ বছরের শেষ নাগাদ পদ্মা সেতু চালু হবে।’
পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যে কথাটি বলেছেন তার একটি লজিক হলো, পদ্মা সেতুর জন্য রিসেন্টলি কিছু মালামাল আসতে সমস্যা হচ্ছে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য। এই মালগুলো মার্চ মাসে আসার কথা ছিল। কিন্তু এখন কিছুটা অনিশ্চয়তা চলে এসেছে। এ জন্য আমার মনে হয় ডিসেম্বরের কথা বলা হয়েছে। আমাদের টাইম আছে ২০২২ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত।’