মোঃ আরিফ হোসেন,নোয়াখালী জেলা সদর উপজেলা প্রতিনিধি : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় সৌদি আরব থেকে দুস্থদের জন্য আসা কুরবানির দুম্বার মাংসের কার্টন বাগিয়ে কর্মীদের নিয়ে ভূরিভোজের আয়োজন করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদারের বিরুদ্ধে।
ভূরিভোজের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশের পর ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।বুধবার (২৯ অক্টোবর) রাতে মুছাপুর ১নং ওয়ার্ড মধ্য মুছাপুর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সামনে হারুনের চা দোকানে এ ভূরিভোজের আয়োজন করা হয়।
এর আগে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিতরণের সময় দুম্বার মাংসের কার্টনটি নেন নুরুল আলম সিকদার।
বহুল আলোচিত ও সমালোচিত বিএনপি নেতা নুরুল আলম সিকদার তার নিজ স্বাক্ষর দিয়ে তারই এলাকার জামায়াত ইসলামী সমর্থিত মধ্য মুছাপুর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের নাম লিখিয়ে ওই কার্টনটি নিয়ে যান। কার্টনটিতে ১০ প্যাকেটে মোট ৩০ কেজি দুম্বার মাংস ছিল বলে জানা গেছে।
ওই ভূরিভোজে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল আলম সিকদার, মধ্য মুছাপুর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আমির হোসেন, যুবদল নেতা আবদুল হালিম সোহেল, শ্রমিক দল নেতা জসীম উদ্দিনসহ ১০-১২ জন। ভূরিভোজের সময় শ্রমিক দল নেতা জসীম ও ছিলো।
জানা যায়, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় দুস্থদের জন্য ২২টি দুম্বার মাংসের কার্টন বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে ১৭টি এতিমখানায় ২১ কার্টন বিতরণ করা হয়। অপর কার্টনটি বিএনপি নেতা নুরুল আলম সিকদার তার নিজ এলাকা মধ্য মুছাপুর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের নামে নিজে স্বাক্ষর দিয়ে নিয়ে যান। পরে বুধবার রাতে হারুনের চা দোকানে বিএনপি নেতা নুরুল আলম শিকদার ও তার কর্মীরাসহ ভূরিভোজের আয়োজন করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মধ্য মুছাপুর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি আমির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবদুল হালিম সোহেল এ ধরনের কোনো কুরবানির পশুর মাংস পাননি বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
তবে সংগঠনটির সহ-সভাপতি হারুনুর রশিদ হারুন মঙ্গলবার রাতে বলেন, তাকে ওই দিন দুপুরের পর দুই প্যাকেট দুম্বার মাংস বিএনপি নেতা নুরুল আলম সিকদার পৌঁছে দিয়ে বলেন, এগুলো রান্না করে আমরা সবাই মিলে খাব।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা নুরুল আলম সিকদার দাবি করেন, মধ্য মুছাপুর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদ জামায়াতে ইসলামী সমর্থিত সংগঠন নয়। সংগঠনটির আমি উপদেষ্টা এবং সংগঠনটির অফিসের সামনের দোকানদার হারুনের কাছে দুই প্যাকেট গোশত রাখা হয়েছে। তবে এ কার্টনের গোশতের প্যাকেট বিএনপি-জামায়াতের একাধিক নেতা নিয়েছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
বিএনপি নেতা নুরুল আলম সিকদারের বিরুদ্ধে ভুয়া দলীয় প্যাড ব্যবহারসহ নানা অভিযোগে আলোচনা ও সমালোচনা হয়। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি জাতীয় দৈনিকের শিরোনামও হন তিনি।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর ফরহাদ শামীম বলেন, নুরুল আলম সিকদার মধ্য মুছাপুর ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের নামে ১০ প্যাকেটের দুম্বার গোশতের কার্টনটি নিজ স্বাক্ষর দিয়ে গ্রহণ করেছেন। রাজনৈতিক দলের নেতাদের দুস্থদের জন্য বরাদ্দকৃত দুম্বার গোশত নেওয়ার বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে বিধি মোতাবেক তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

