কিশোরগঞ্জ কারাগারে বন্দীদের জন্য আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আকিব হৃদয়, নিজস্ব প্রতিবেদক, কিশোরগঞ্জঃ কিশোরগঞ্জ কারাগারে বন্দিদের জন্য কোভিড-১৯ আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল রোববার (২৩ মে) দুপুরে ভার্চুয়ালি কিশোরগঞ্জ পুরাতন কারাগারে (জেলা কারাগার-২) এ আইসোলেশন সেন্টারটি উদ্বোধন করেন।
এ সময় তিনি কিশোরগঞ্জ ছাড়াও কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার এবং ফেনী কারাগার-২ এ কোভিড-১৯ আইসোলেশন সেন্টার উদ্বোধন করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের জন্য, জনগণের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে জীবনের ৩ হাজার ৫৩ দিন কারাগারে কাটিয়েছেন। এখন কারাগারের পরিস্থিতি অনেক উন্নত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও বন্দিরা মোবাইল ফোনে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদেরকে বিকাশের মাধ্যমে স্বজনরা টাকা পাঠাচ্ছেন। অনেক কারাগারে বন্দির হাতকে কর্মীর হাতে পরিণত করার কার্যক্রম চালু করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বের কারণে করোনার দিক থেকে বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে। এখনো কারাগারগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে করোনা ধরা পড়েনি। তবে কারাবন্দিরা কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে সেটা অন্য বন্দিদের মধ্যেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। সেই কারণেই তিনটি কারাগারে ১৩৯ জন রোগী ধারণ ক্ষমতার তিনটি আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে করোনার তৃতীয় ঢেউ খুব ভালোভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।
কিশোরগঞ্জ কারাগারে এখন পর্যন্ত কোনো বন্দি করোনায় আক্রান্ত নেই। তবে এই সেন্টারে পাশের ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার, শেরপুর এবং নেত্রকোনার কারাগার থেকেও করোনা রোগী পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান। কিশোরগঞ্জ কারাগার-২ আইসোলেশন সেন্টারে উদ্বোধনের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন- জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম, পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. মো. মুজিবুর রহমান, জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমএ আফজাল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল্লাহ আল মাসউদ, পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট শাহ আজিজুল হক, জেল সুপার মো. বজলুর রশিদ, গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. বাহাদুর আলী, বেসরকারি কারা পরিদর্শক মানছুরা জামান নূতন, সালমা হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, কিশোরগঞ্জ শহরতলিতে প্রায় ৩০ একর জায়গার ওপর ‘কিশোরগঞ্জ কারাগার-১’ নামে নতুন কারাগার নির্মাণ করে সেখানে সব কারাবন্দিদের স্থানান্তর করার পর পুরোনো কারাগারটি খালি রয়েছে। এই পুরনো কারাগারে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করে তাতে সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় ২৮টি বেড স্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি পুরুষ বন্দিদের জন্য, আর চারটি নারী বন্দিদের জন্য। এখানে দুজন চিকিৎসক, চারজন নার্স এবং আটজন ওয়ার্ড বয় নিয়োগ দেয়া হয়েছে।