ইন্দোনেশীয় পদ্ধতির চাষাবাদে বাজিমাত!

Share the post

লবণাক্ত হওয়ায় নোয়াখালীর হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জ উপকূলের শত-শত হেক্টর জমি এখন আর অনাবাদি পড়ে নেই। সর্জন পদ্ধতির চাষাবাদে অভিনব সাফল্য মিলেছে এসব জমিতে। একইসঙ্গে সবজি ও মাছ চাষের এ পদ্ধতি চরাঞ্চলের চাষিদের নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছে। স্বল্প পুঁজিতে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন এ পদ্ধতিতে আগ্রহ বাড়ছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সর্জন মূলত ইন্দেনেশিয়ার একটি চাষাবাদ পদ্ধতি। বর্ষার আগে লবণাক্ত জমি থেকে মাটি তুলে উঁচু করে আড়া তৈরি করা হয়। আড়ার ফাঁকে ৫ থেকে ৭ ফুট গভীর নালা তৈরি করে জমিকে চাষের উপযোগী করা হয়। তার ওপরে ঝাঁক তৈরি করে তাতে করলা, শশা, বরবটি, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, মিষ্টি কুমড়া ও লাউ চাষ করা হয়। আর ঝাঁকের নিচের পানিতে চাষ করা হয় তেলাপিয়া, রুই, কার্পসহ নানা প্রজাতির মাছ। এ পদ্ধতিতে বর্ষা মৌসুমেও যেমন ফলন ভালো হয় তেমন শুষ্ক মৌসুমেও পানি না থাকলে, নালা থেকে পানি তুলে চাষাবাদ করা যায়।

এ বিষয়ে একজন কৃষক বলেন, উপরে শাকসবজির চাষ করি। আর নিচে মাছের চাষ করি।অপর এক কৃষক জানান, সার্জন পদ্ধতির চাষে তিনি ৩০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। অপরদিকে বিক্রি করেছেন ১ লাখ টাকায়।

এ পদ্ধতির চাষাবাদে অভিনব সাফল্য মিলেছে নোয়াখালীর উপকূলীয় শত শত হেক্টর জমিতে। হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানিগঞ্জের উপকূলীয় অঞ্চলের মাটি লবণাক্ত হওয়ায় জমিগুলো অনাবাদী পড়ে থাকত। কিন্তু এখন সে চিত্র পাল্টে গেছে। সর্জন পদ্ধতি ব্যবহার করায় সবুজে ছেয়ে গেছে প্রতিটি এলাকার জমি।
এক কৃষক বলেন, আমি এক একর জমিতে চাষ করতে খরচ হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে, মাছ ও সবজি বিক্রি করেছি ২ লাখ টাকার।

প্রতি একর জমিতে এক লাখ টাকার সবজি এবং অর্ধলক্ষ টাকার মাছ উৎপাদন করতে পারায় এ পদ্ধতিতে স্থানীয়দের আগ্রহ বাড়ছে প্রতিদিন। কৃষি অধিদপ্তর বলছে, আগামী মৌসুমে সর্জন পদ্ধতিতে চাষাবাদ আরও বাড়ানোর বিষয়ে কাজ করছেন তারা।

এ বিষয়ে নোয়াখালী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. শহীদুল হক বলেন, এই পদ্ধতিতে একইসঙ্গে মাছ ও সবজি উৎপাদিত হয়। এতে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন।

কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলার ২ হাজার ৭১ হেক্টর জমিতে সর্জন পদ্ধতিতে সবজি ও মাছ চাষ করা হয়েছে।

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated