আদালতে আবরার হত্যার আসামিরা

Share the post

বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা আজ। বেলা ১২টার দিকে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর আদালতে এ রায় ঘোষণার কথা রয়েছে। রায় ঘোষণার জন্য এরই মধ্যে ২২ আসামিকে কেরাণীগঞ্জ কারাগার থেকে আদালতে নেয়া হয়েছে।

রোববার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে কারাগার থেকে ২২ আসামিকে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাজতখানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল হাকিম।হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর মামলার রায় ঘোষণা হচ্ছে।

ভবিষ্যতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেন আর কারও আবরারের মতো পরিণতি না হয়, তা নিশ্চিত করতে আসামিদের সর্বোচ্চ সাজার আশা করছে পরিবার।

রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, আসামিদের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন তারা।এর আগে, গত ১৪ নভেম্বর এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ। ওইদিনই রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ঠিক করেন বিচারক।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিনই ছাত্রলীগের ১৯ নেতাকর্মীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন আবরারের বাবা।গত বছর ১৩ নভেম্বর ২৫ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২১ জানুয়ারি তা আমলে নেয় আদালত।

কুষ্টিয়ার ছেলে আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৯ সালের সাতই অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।এজাহারে আবরার ফাহাদের পিতা ও তদন্তের পর পুলিশ বলেছিল, আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ পরদিন চকবাজার থানায় একটি মামলা করেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়, শিবির সন্দেহে তাকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে মেরেছে বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেখানে বুয়েট ছাত্রলীগের ১৯ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়।

মামলার তদন্তের পর ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা বলেছিলেন, আসামিরা র‍্যাগিংয়ের নামে বুয়েটে আতংক বা একটা ভয়ের রাজত্ব কায়েম করেছিল, তার ধারাবাহিকতায়ই একাধিক কারণে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে। এর তথ্য-প্রমাণ তারা তদন্তে পেয়েছেন।

তদন্তের পর ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ২৫ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দেয় পুলিশ। ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি সেই অভিযোগপত্রটি আদালত আমলে নেন। ওই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে, ৩০২ ধারায় নরহত্যা, ৩০২ এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী হত্যার পূর্ব-পরিকল্পনা এবং ১০৯ ও১১৪ ধারায় হত্যায় অংশগ্রহণের অভিযোগ গঠন করা হয়। এসব অভিযোগে বলা হয়, তারা পরস্পর যোগসাজশে শিবির সন্দেহে আবরার ফাহাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।এই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর এই মামলার অভিযোগে কিছু ভুল সংশোধন করে অভিযোগ পুনর্গঠন করা হয়।

আসামিদের বিরুদ্ধে মোট তিনটি অভিযোগ আনা হয়। এগুলো হচ্ছে, ৩০২ ধারায় নরহত্যা, ৩০২ এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী হত্যার পূর্ব-পরিকল্পনা এবং ১০৯ ও১১৪ ধারায় হত্যায় অংশগ্রহণের অভিযোগ গঠন করা হয়। এসব অভিযোগে বলা হয়, তারা পরস্পর যোগসাজশে শিবির সন্দেহে আবরার ফাহাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

এ মামলায় অভিযোগপত্রভুক্ত ২২ আসামি হলেন মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ হোসেন, মো. অনিক সরকার, মেহেদী হাসান রবিন, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, মো. মুজাহিদুর রহমান, খন্দকার তাবাককারুল ইসলাম তানভীর, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মো. আকাশ হোসেন, মো. শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, মুয়াজ আবু হুরায়রা, মুনতাসির আল জেমি, অমিত সাহা, ইশতিয়াক আহমেদ মুন্না, মো. শামসুল আরেফিন রাফাত, মো. মিজানুর রহমান ও এস এম মাহমুদ সেতু।

পলাতক তিন আসামি হলেন মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মুজতবা রাফিদ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated